প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের ৫টি উপায়
প্রাকৃতিক সম্পদ কাকে বলেঃ
প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের ৫টি উপায় সম্পর্কে জানার আগে প্রাকৃতিক সম্পদ কাকে বলে এ সম্পর্কে জানতে হবে।
প্রকৃতি থেকে যে সম্পদ আহরণ করা হয় তাকে প্রাকৃতিক সম্পদ বলে। মাটি, পানি, বায়ু, উদ্ভিদ, তেল, কয়লা, বন-জঙ্গল, নদী, সমুদ্র সবই প্রাকৃতিক সম্পদের উদাহরন। যে কোন দেশের উন্নয়নে প্রাকৃতিক সম্পদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রাকৃতিক সম্পদ সীমিত। নিয়মিত ব্যবহারে যে কোন সময় গুরুত্বপূর্ণ এই প্রাকৃতিক সম্পদ শেষ হয়ে যাবে। তাই প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাকৃতিক সম্পদের প্রকারভেদঃ
প্রাকৃতিক সম্পদ দুই প্রকারঃ নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ ও অনবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ।
নবায়নযোগ্যঃ
যে প্রাকৃতিক সম্পদ পুনরায় ব্যবহার করা যায় তাকে নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ বলে। যেমন, মাটি, পানি, বায়ু, সুর্যের আলো ইত্যাদি।
অনবায়নযোগ্যঃ
যে প্রাকৃতিক সম্পদ একবার ব্যবহারেই নিঃশেষ হয়ে যায় অর্থাৎ বারবার ব্যবহার করা যায় না তাকে অনবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ বলে। খনিজ পদার্থ, জীবাশ্ম জ্বালানি অনবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদের উদাহরণ।
আরও পড়ুন: যুক্তফ্রন্ট কেন গঠিত হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধে জর্জ হ্যারিসনের অবদান। মুক্তিযুদ্ধের সময় শরণার্থীরা কোথায় এবং কিভাবে আশ্রয় পেয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পক্ষের ভূমিকা বিস্তারিত। মুক্তিযুদ্ধে সংগীত শিল্পীদের অবদান সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেখুন এই পোস্টে।
প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষনের ৫টি উপায়ঃ
প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের ৫টি উপায়গুলো কি কি সে সম্পর্কে আমরা জানব। প্রাকৃতিক সম্পদের সুরক্ষা এবং এর পরিকল্পিত ব্যবহারই হচ্ছে প্রাকৃতিক সম্পদের সংরক্ষণ। প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের ৫টি উপায় নিচে দেয়া হলো।
১। সম্পদের ব্যবহার কমানোঃ
সম্পদের ব্যবহার কমিয়ে প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ করা যায়। এজন্য আমাদের সম্পদ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়া উচিত। শক্তির ব্যবহার কমিয়ে বা বর্জ্য উৎপাদন কমিয়ে প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংরক্ষণ করতে হবে। যেমন, রান্না শেষে চুলা নিভিয়ে ফেলা।
২। সম্পদের পুনব্যবহারঃ
যে কোন জিনিসের পুনরায় ব্যবহার করে আমার বর্জ্য কমাতে পারি এবং প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ করতে পারি। কোন জিনিসকে রিসাইকেল করা বা ফেলে দেয়ার পূর্বে বারবার ব্যবহার করা উচিত। কোন জিনিস ভেঙ্গে গেলে তা ফেলে না দিয়ে তা মেরামত করা উচিত।
৩। সম্পদের রিসাইকেল করাঃ
রিসাইকেলের মাধ্যমে পুরনো বস্তুকে নতুন বস্তুতে পরিনত করা যায়। জিনিসপত্র রিসাইকেল করলে প্রাকৃতিক সম্পদের উপর চাপ কম পড়ে। যেমন, কাগজ রিসাইকেল করলে গাছ কাটার উপর চাপ কম পড়বে। ফলে বনায়ন ধ্বংস হবে না। পরিমিত বনাঞ্চল থাকলে সে দেশের জলবায়ু ও আবহাওয়া উদ্ভিদ ও প্রাণীর জন্য খুবই অনুকূল থাকে।
৪। নবায়নযোগ্য জ্বালানী ব্যবহারঃ
মানুষ প্রধানত অনবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ যেমন, তেল, কয়লা এবং প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করেই বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। এগুলো একবার ব্যবহারেই নিঃশেষ হয়ে যায়। তাই নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ যেমন, সূর্যের আলো, বায়ুপ্রবাহ এবং পানির স্রোত আমাদের ব্যবহার করতে হবে।
৫।সচেতনতা বৃদ্ধি ও অভ্যাসের পরিবর্তনঃ
প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষনে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সচেতনতা ও অভ্যাস পরিবর্তনের বিষয়টি একটি উদাহরনের মাধ্যমে বুঝিয়ে দেওয়া যাক, ধরুন বাড়ি থেকে বাজারের দূরত্ব ১ কিলোমিটার। এই ১ কিলোমিটার দূরত্ব আমরা পায়ে হেঁটে যেতে পারি। আবার মোটরসাইকেল কিংবা অন্য যে কোন বাহনে যেতে পারি। এরূপ ক্ষেত্রে আমাদের পায়ে হাঁটার অভ্যাস করতে হবে। তাহলে একদিকে শক্তির ব্যবহার হ্রাস পেলো এবং হাঁটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। অনুরূপ আমরা পলিথিনের বিকল্প পাটের ব্যাগ ব্যবহার কমিয়ে মাটি ও পরিবেশের মতো প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ করতে পারি। রাসায়নিক সার ও কীটনাষকের পরিবর্তে জৈবসার ও জৈবপ্রযুক্তি ব্যবহার করে চাষাবাদ করতে পারি। এতে একদিকে পরিবেশ দূষন হ্রাস পাবে এবং অন্যদিকে মাটি, পানি ও বায়ুর মতো প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষিত হবে।
আরও পড়ুন:
মাদার তেরেসা সম্পর্কে ১০ টি বাক্য
অপারেশন সার্চলাইট এর নীল নকশা কে তৈরি করেন
অপারেশন সার্চলাইটের নৃশংস হত্যাকান্ডের খবর বিশ্বে কীভাবে ছড়িয়েছিল