আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার কারণ ও ফলাফল
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা কিঃ
পাকিস্তান সরকার ১৯৬৮ সালের জানুয়ারি মাসে আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রধান আসামি করে সেনাবাহিনীর কয়েকজন কর্মরত ও প্রাক্তন সদস্য এবং ঊর্ধ্বতন সরকারী অফিসারের বিরুদ্ধে যে মামলা দায়ের করে তা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা নামে পরিচিত। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে, তারা ভারত সরকারের সহায়তায় শসস্ত্র অভ্যূত্থানের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানকে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। ভারতের ত্রিপুরার আগরতলা শহরে প্রতিপক্ষ ও আসামি পক্ষদের মধ্যে এই ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে মামলায় উল্লেখ থাকায় একে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা বলা হয়।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে এই মামলা এবং এর প্রতিক্রিয়া বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। পূর্ব পাকিস্তানের জনগনের তীব্র আন্দোলনের মুখে পাকিস্তান সরকার অচিরেই মামলাটি প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে ঐতিহাসিক আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। ১৯৬৮ সালের জানুয়ারি মাসে বঙ্গবন্ধুকে প্রধান করে মোট ৩৫ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করে পাকিস্তান। সরকারি নথিতে এ মামলার নাম রয়েছে, রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিবুর রহমান ও অন্যান্য। এই মামলার কারনে বাঙ্গালিরা আরও ঐক্যবদ্ধ হতে পেরেছিল। এই মামলা বুমেরাং হয়েছিল পশ্চিম পাকিস্তানিদের জন্য।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার প্রেক্ষাপটঃ
বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা দাবি আইয়ুব খানের পক্ষে মেনে নেওয়া কখনই সম্ভব ছিল না। তাই ছয় দফাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক চেতনা, স্বাধিকার আন্দোলন। এ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বন্ধ করার জন্য আইয়ুব খান মোনায়েম খান নির্যাতন-নিপীড়ন শুরু করে। এরই অংশ হিসেবে রাষ্ট্রপক্ষ ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রধান আসামি করে ৩৫ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনে এক মামলা করে। শাসকগোষ্ঠীর অভিযোগ ছিল শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ভারতের সহায়তায় সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানকে পাকিস্তান রাষ্ট্র থেকে বিচ্ছিন্ন করার উদ্দেশ্যে ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় এক ষড়যন্ত্র করেছে। আগরতলা স্থানটির নাম অনুযায়ী এই মামলার নাম দেওয়া হয় আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা। সরকারি নথিতে দায়েরকৃত এ মামলাকে রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিবুর রহমান এবং অন্যান্য নামে অভিহিত করা হয়। ১৯৬৮ সালের ১৯ জুন হাইকোর্টের বিচারপতিকে নিয়ে একটি ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়। ছাত্র-জনতা এই মামলাকে একটি ষড়যন্ত্র বলে আখ্যায়িত করে। প্রকৃতপক্ষে শেখ মুজিবুর রহমানসহ আরও অনেক সাহসী বাঙ্গালী অফিসারকে দেশের শত্রু বলে চিহ্নিত করে তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করে পূর্ব পাকিস্তানের স্বার্থ ও প্রতিবাদী আন্দোলনকে চিরতরে স্তব্ধ করে দেওয়াই ছিল এ মামলার মূখ্য উদ্দেশ্য।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার কারণঃ
৬ দফা দাবিকে চিরতরে নস্যাৎ করাঃ
১৯৬৬ সালে শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক উত্থাপিত ৬ দফা দাবি নস্যাৎ করাই ছিল আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার মূখ্য উদ্দেশ্য। ৬ দফা আন্দোলন আইয়ূব বিরোধী আন্দোলনে পরিণত হলে স্বৈরাচারী আইয়ুব মোনায়েম সরকার শেখ মুজিবুর রহমান এবং আওয়ামী লীগকে জনবিচ্ছিন্ন করার জন্য আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার নীলনঁকশা।
শেখ মুজিবসহ কতিপয় দেশ প্রেমিককে রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে চিহ্নিত করাঃ
১৯৬৭ সালের ডিসেম্বর মাসে আইয়ুব সরকার পূর্ব পাকিস্তানের কয়েকজন রাজনৈতিক ও সামরিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে পাকিস্তানের স্বার্থবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগ আনেন। ১৯৬৮ সালের জানুয়ারি মাসে শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রধান আসামী করে আরও ৩৪ জন সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করা হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল শেখ মুজিবসহ কতিপয় সৎ সাহসী দেশ প্রেমিককে রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে চিহ্নিত করা।
বাঙ্গালিদের মধ্যে একাত্মতার সংকট সৃষ্টিঃ
তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ শেখ মুজিব ও আওয়ামী লীগের প্রতি প্রবল সমর্থন ব্যক্ত করার মধ্য দিয়ে যে একাত্মতার সৃষ্টি হয় তাতে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী শঙ্কিত হয়ে পড়ে। এই মামলার মধ্য দিয়ে শেখ মুজিব ও আওয়ামী লীগকে অন্ধ করে বাঙ্গালিদের মধ্যে একাত্মতাবোধের সংকট সৃষ্টির প্রচেষ্টা চালানো হয়।
পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর ক্ষমতার ভিত শক্তিশালী করাঃ
আগরতলা মামলার একট অন্যতম কারণ পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর ক্ষমতার ভিত আরও শক্তিশালী করা। এজন্য তারা ঘৃণ্য আগরতলা মামলার আশ্রয় গ্রহণ করে শেখ মুজিবকে পাকিস্তানের শত্রু এবং ভারতের দালাল বলে প্র্রচার করে।
স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধিকার আন্দোলন নস্যাৎ করাঃ
আগরতলা মামলার একটি কারণ ছিল পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের দীর্ঘদিনের স্বাধিকার ও স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলন নস্যাৎ বা বানচাল করা। পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই শাসকগোষ্ঠী পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে স্বায়ত্তশাসন প্রদানে গড়িমসি করে আসছিল।
শাসন ও শোষণ অব্যাহত রাখাঃ
পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই শাসক গোষ্ঠী পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের ওপর শাসন ও শোসনের যে স্টিম রোলার চালিয়ে আসছিল তা অব্যাহত রাখাও এ মামলার অন্যতম কারণ বলে অনেকে মনে করে।
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বন্ধ করাঃ
পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই শাসকগোষ্ঠী পাকিস্তানের অবাধ, সুষ্ঠুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুুু, সাধারণ নির্বাচনে অনীহা প্রকাশ করে আসছিল। কারণ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তৎকালীন ক্ষমতাসীনরা পরাজিত হবে বলে তাদের মনে শঙ্কা ছিল। এই মামলার এটি অন্যতম কারণ।
বাঙ্গালিদের দাবিয়ে রাখাঃ
বঙ্গালিরা তাদের নায্য অধিকারে সব সময় সোচ্চার ছিল। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে পাকিস্তানি শাসকরা বাঙ্গালিদের ওপর জুলুম করেছে তখনই বাঙালিরা রুখে দাঁড়িয়েছে। ছয় দফা দাবিকে কেন্দ্র করে যে জনস্রোত সৃষ্টি হয়েছিল তা থামিয়ে দেওয়া এবং ভবিষ্যতের জন্য বাঙ্গালিদের দাবিয়ে রাখার জন্যই নেতৃস্থানীয় লোকদের বিরুদ্ধে আগরতলা মামলা দায়ের করা হয় বলে অনেকে মনে করেন।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামিদের পরিচয়ঃ
১। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান , গোপালগঞ্জ (তৎকালীন ফরিদপুর)।
২। লে. কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেন (নৌবাহিনী), পিরোজপুর (তৎকালীন বরিশাল)।
৩। স্টুয়ার্ড মুজিবুর রহমান (নৌবাহিনী), মাদারিপুর (তৎকালীন ফরিদপুর)।
৪। সুলতানউদ্দিন আহমেদ (নৌবাহিনী), গাজীপুর (তৎকালীন ঢাকা)।
৫। নূর মোহাম্মদ (নৌবাহিনী), মুন্সিগঞ্জ (তৎকালীন ঢাকা)।
৬। আহমেদ ফজলুর রহমান, সিএসপি, কুমিল্লা।
৭। ফ্লাইট সার্জেন্ট মফিজুল্লাহ (বিমাননাহিনী), নোয়াখালী।
৮। এ. বি. এম. আব্দুস সামাদ (বিমানবাহিনী), পিরোজপুর (তৎকালীন বরিশাল)।
৯। হাবিলদার দলীল উদ্দিন (সেনাবাহিনী) , বরিশাল।
১০। রুহুল কুদ্দুস , সিএসপি, সাতক্ষীরা (তৎকালীন খুলনা)
১১। ফ্লাইট সার্জেন্ট মোহাম্মদ ফজলুল হক ( বিমানবাহিনী), বরিশাল।
১২। ভূপতি ভূষণ চৌধুরী ওরফে মানিক চৌধুরী, (ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতা) চট্রগ্রাম।
১৩। বিধান কৃঞ্চ সেন (রাজনৈতিক নেতা, চট্রগ্রাম।
১৪। সুবেদার আব্দুর রাজ্জাক (সেনাবাহিনী), চাঁদপুর (তৎকালীন কুমিল্লা)।
১৫। হাবি. ক্লার্ক মুজিবুর রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
১৬। ফ্লাইট সার্জেন্ট মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক (বিমানবাহনী), কুমিল্লা।
১৭। সার্জেন্ট জহুরুল হক (বিমানবাহিনী), নোয়াখালী।
১৮। এ. বি. এম. মোহাম্মদ খুরশীদ। ফরিদপুর।
১৯। খান এম শামসুর রহমান, সিএসপি, ঢাকা।
২০। রিসালদার এ. কে. এম. শামসুল হক, (সেনাবাহিনী) মানিকগঞ্জ (তৎকালীন ঢাকা)।
২১। হাবিলদার আজিজুল হক (ভোলা)।
২২। এস. এ. সি মাহফুজুল বারী (বিমানবাহিনী), লক্ষীপুর (তৎকালীন নোয়াখালী)
২৩। সার্জেন্ট শামসুল হক (বিমানবাহিনী) ফেনী (তৎকালীন নোয়াখালী)।
২৪। মেজর ডা. শামসুল আলম (সেনাবাহিনী), ঢাকা।
২৫। ক্যাপ্টেন মুহাম্মদ আব্দুল মুতালিব (সেনাবাহিনী), নেত্রকোনা (তৎকালীন ময়মনসিংহ)।
২৬। ক্যাপ্টেন এম শওকত আলী মিঞা (সেনাবাহিনী) শরিয়তপুর (তৎকালীন ফরিদপুর)।
২৭। ক্যাপ্টেন খন্দকার নাজমুল হুদা (সেনাবাহিনী), বরিশাল।
২৮। ক্যাপ্টন এ. এন. এম. নুরুজ্জামান (সেনাবাহিনী), নরসিংদী (তৎকালীন ঢাকা)।
২৯। সার্জেন্ট আব্দুল জলিল (বিমানবাহিনী), নরসিংদী (তৎকালীন ঢাকা)।
৩০। মোহাম্মদ মাহবুুব উদ্দিন চৌধুরী , হবিগঞ্জ (তৎকালীন সিলেট)।
৩১। লেফটেন্যান্ট এম. এম. মতিউর রহমান (নৌবাহিনী), নড়াইল (তৎকালীন যশোর)।
৩২। প্রাক্তন সুবাদার এ. কে. এম তাজুল ইসলাম সেনাবাহিনী), পিরোজপুর (তৎকালীন বরিশাল)।
৩৩। মোহাম্মদ আলী রেজা (ইন্সট্রাক্টর-নিপা), কুষ্টিয়া।
৩৪। ক্যাপ্টেন ডা. খুরশীদ উদ্দিন আহমেদ (সেনাবাহিনী) ময়মনসিংহ।
৩৫। লেফটেন্যান্ট আব্দুর রউফ (নৌবাহিনী), কিশোরগঞ্জ (তৎকালীন ময়মনসিংহ)।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার মূল উদ্দেশ্যঃ
- ছয় দফায় উল্লিখিত স্বায়ত্তশাসনের দাবিকে অস্বীকার করা।
- বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দেওয়া।
- বিশ্ব বিবেককে জানিয়ে দেওয়া যে, বাঙালিরা ষড়যন্ত্রকারী, অবিশ্বস্ত এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী।
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলন থেকে দূরে সরিয়ে রাখা।
- পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে বিভেদ এবং বৈষম্য বাড়িয়ে শোষণ অব্যাহত রাখা।
- শেখ মুজিবুর রহমানকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে স্বাধিকার আন্দোলনের গতিকে থামিয়ে দেওয়া।
- পরবর্তী নির্বাচনে মুসলিম লীগের বিজয় নিশ্চিত করা এবং পশ্চিম পাকিস্তানের প্রভাবকে জোরদার করা।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার ফলাফলঃ
১। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার ফলে পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং ছয়দফা জনগণের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
২। উক্ত মামলাকে বাঙ্গালি জনতা তাদের স্বাধিকার আন্দোলনের পথে বাধা বলে মনে করে এবং এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানায়।
৩। এ মামলার ফলে শেখ মুজিবুর রহমান বাংলার অবিসাংবাদিত নেতায় পরিণত হন এবং পরবর্তীতে গণসংবর্ধনা দিয়ে তাকে বঙ্গবন্ধু উপাধি দেওয়া হয়।
৪। এ মামলার ফলে পূর্ব বাংলার গণমাধ্যমগুলো পাকস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বৈষম্য, ঘৃণা ও অত্যাচার জনসমক্ষে তুলে ধরার সুযোগ পায়।
৫। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যূত্থান হলো আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার প্রত্যক্ষ ফল। এর ফলে বাঙ্গালি জাতি ঐক্যবদ্ধ হয় এবং জাতীয়তাবাদী আন্দোলন দানা বাঁধতে থাকে।
৬। ১১ দফা এবং ৬ দফা এ মামলার বহিঃপ্রকাশ।
সবশেষে বলা যায়, বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদের বিকাশে এবং স্বাধীন জাতির অভ্যূদয়ে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অবদান চিরস্মরণীয়।