অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারর উপদেষ্টাদের তালিকা এবং প্রধান উপদেষ্টা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্ট অসহযোগ আন্দোলনে আওয়ামী লীগের প্রধান এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করলে বাংলাদেশ কার্যতঃ সরকার শূণ্য হয়ে পড়ে। এই অবস্থায় দেশে অস্থায়ী সরকার গঠন করা হয়। এই সরকার কে বাংলাদেশের অন্তর্বতীকালীন সরকার বলা হয়। ২০২৪ সালের ৮ই আগস্ট রাষ্ট্রপতি কর্তৃক শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান এর মাধ্যমে এই অন্তর্বতীকালীন সরকার ব্যবস্থা গঠিত হয়। ড. মুহাম্মদ ইউনুছ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এই অন্তর্বতীকালীন সরকার মূলত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার প্রতিচ্ছবি হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে। দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে দেশকে নেতৃত্ব দেয়া, দেশকে পুনর্গঠিত করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনাই অন্তর্বতীকালীন সরকারের মূল লক্ষ্য।
আরও পড়ুন: যুক্তফ্রন্ট কখন গঠিত হয় এবং এর আদ্যোপান্ত। মুক্তিযুদ্ধের সময় শরণার্থীরা কোথায় এবং কিভাবে আশ্রয় পেয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পক্ষের ভূমিকা বিস্তারিত। মুক্তিযুদ্ধে সংগীত শিল্পীদের অবদান সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেখুন এই পোস্টে। মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় উপাধি গুলো কি কি যুক্তফ্রন্ট কেন গঠিত হয়েছিল অপারেশন সার্চলাইটের নৃশংস হত্যাকান্ডের খবর বিশ্বে কীভাবে ছড়িয়েছিল।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারর উপদেষ্টাদের তালিকা তালিকা ২০২৪
ক্রমিক নং | উপদেষ্টাদের নাম | পদবী | দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রনালয় |
১ | ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস | প্রধান উপদেষ্টা | মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী, খাদ্য মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। |
২ | সালেহ উদ্দিন আহমেদ | উপদেষ্টা | অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় |
৩ | ড. আসিফ নজরুল | উপদেষ্টা | আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, |
৪ | আদিলুর রহমান খান | উপদেষ্টা | শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় |
৫ | এ এফ হাসান আরিফ | উপদেষ্টা | স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় |
৬ | তৌহিদ হোসেন | উপদেষ্টা | পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় |
৭ | সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান | উপদেষ্টা | পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় |
৮ | শারমিন মুরশিদ | উপদেষ্টা | সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় |
৯ | বিধান রঞ্জন রায় | উপদেষ্টা | প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় |
১০ | ফারুক-ই-আজম | উপদেষ্টা | মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় |
১১ | ব্রি.জে এম সাখাওয়াত হোসেন (অব) | উপদেষ্টা | বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় |
১২ | সুপ্রদীপ চাকমা | উপদেষ্টা | পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় |
১৩ | আ.ফ.ম খালিদ হাসান | উপদেষ্টা | ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় |
১৪ | ফরিদা আখতার | উপদেষ্টা | মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় |
১৫ | নূর জাহান বেগম | উপদেষ্টা | স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় |
১৬ | মো. নাহিদ ইসলাম | উপদেষ্টা | ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় |
১৭ | আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া | উপদেষ্টা | যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় |
১৮ | ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ | উপদেষ্টা | পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় |
১৯ | আলী ইমাম মজুমদার | উপদেষ্টা | প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সংযুক্ত |
২০ | মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান | উপদেষ্টা | বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, এবং রেলপথ মন্ত্রণালয় |
২১ | লে. জে. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী | উপদেষ্টা | স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং কৃষি মন্ত্রণালয় |
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সংক্ষিপ্ত বৃত্তান্তঃ
ড. মুহাম্মদ ইউনুসঃ
বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ড. মুহাম্মদ ইউনুস। নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুস একজন সমাজসেবক, অধ্যাপক, সামাজিক ব্যবাসা ধারণার উদ্ভাবক। মুহাম্মদ ইউনুস ১৯৪০ সালের ২৮ শে জুন চট্রগ্রাম জেলার হাটহাজারী থানার বাথুয়া গ্রামে জন্মগ্রহন করে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।১৯৭১ সালে ভান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের Graduet Programme in Economic Development (GPED) হতে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিক কমিটি প্রতিষ্ঠা করেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সমর্থন আদয়ের চেষ্টা করেন। সে জন্য তিনি বাংলাদেশ নিউজলেটারও প্রকাশ করতেন। মুক্তিযুদ্ধ শেষ হলে দেশে ফিরে আসেন এবং নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে সরকারের পরিকল্পনা কমিশনে নিযুক্ত হন। পরে চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন।
১৮৭৪ সালে বাংলাদেশে স্মরণকালের ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। দূর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করে তিনি দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম শুরু করেন। তিনি গ্রামীন অর্থনৈতিক প্রকল্প চালু করেন। ২০০৬ সালে ড. মুহাম্মদ ইউনুস এবং গ্রামীন ব্যাংককে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়। ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ড. মুহাম্মদ ইউনুস প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।
আরো কিছু প্রশ্নোত্তরঃ
ড ইউনূসের বাড়ি কোথায়?
ড. মুহাম্মদ ইউনুস ১৯৪০ সালের ২৮ শে জুন চট্রগ্রামের হাটহাজারি থানার শিকারপুর ইউনিয়নের বাথুয়া গ্রামে জন্মগ্রহন করেন।
বাংলাদেশের গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা কে?
ড. মুহাম্মদ ইউনুস।
গ্রামীণ ব্যাংক কত সালে নোবেল পুরস্কার পান?
২০০৬ সালে।
বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল বিজয়ীর নাম কি?
ড. মুহাম্মদ ইউনুস।
ডক্টর ইউনুস কেন নোবেল পুরস্কার পান?
গ্রামীন ব্যাংক এবং ক্ষুদ্র ঋণ ধারণার জন্য।
নোবেল পুরস্কারের মূল্য কত বাংলাদেশি টাকায়?
বাংলাদেশের মুদ্রায় এই অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় ১০ কোটি ৯০ লাখ টাকার মত
ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে আরও জানার জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ সকল তথ্য লিংকে প্রবেশ করুন।
আরও পড়ুন: